1. admin@sathikkhabor.com : JbSknUo :
  2. ratanbarua67@gmail.com : Ratan Barua : Ratan Barua
  3. baruasangita145@gmail.com : Sangita Barua : Sangita Barua
শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রামে বিয়ে করতে এসে ৬ কিশোর-কিশোরী পুলিশ হেফাজতে

সংগীতা বড়ুয়া
  • Update Time : শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১
  • ২৯১ Time View

সংগীতা বড়ুয়া, চট্টগ্রাম : ঢাকার ধামরাই থেকে পালিয়ে এসে চট্টগ্রামে বিয়ে করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছয় কিশোর-কিশোরী।

শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকা থেকে কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়।

গণমাধ্যমের কাছে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারি কমিশনার (এসি) নোবেল চাকমা।

তিন কিশোরীর দুজন ষষ্ঠ, একজন পঞ্চম শ্রেণির আর তিন কিশোরের দুজন নবম, একজন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রায় দুই সপ্তাহের পরিকল্পনার পর ‘বিয়ে করে’ নিজেদের মতো করে নিজেরা গুছিয়ে নিতে তাদের এই পলায়ন।

কোতোয়ালী জোনের এসি নোবেল চাকমা বলেন, রেল স্টেশনে সন্দেহজনকভাবে চলাফেরার সময় তাদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। এসময় তাদের দুই জন নিজেদের ‘স্বামী-স্ত্রী’, অন্যরা ‘বন্ধু-বান্ধবী’ পরিচয় দেয়।

তিনি আরো বলেন, তাদের সন্দেহজনক কথাবার্তার জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, বিয়ে করার জন্য তারা পালিয়ে চট্টগ্রাম এসেছে। থানায় এনে তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করি আমরা।

পুলিশ জানিয়েছে, ছয় জনের মধ্যে পাঁচ জনের বাড়ি ধামরাই উপজেলার বড় কুশিরিয়া কাজিয়ারকুণ্ড গ্রামে। আর এক জনের বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায়। তবে করোনায় স্কুল ছুটি থাকায় সেই একজন কাজিয়ারকুণ্ডে খালার বাড়িতে থেকে টাইলস ফিটিং করার কাজ শিখছিলো।

তিন কিশোরীর দুই জন ধামরাইয়ে স্থানীয় দুইটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে অন্যজন স্থানীয় একটি মহিলা মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তিন কিশোরের দুই জন ধামরায়ের স্থানীয় দুইটি স্কুলে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এবং আরেক জন কুমিল্লার লাকসামে নিজ বাড়িতে একটি স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ে।

সবার বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় তাদের মধ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে উঠে। তাদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক কিশোরীর বিয়ে ঠিক করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে তারা সবাই এক সাথে বাড়ি থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

এজন্য তারা গত দুই সপ্তাহ ধরে নিজেরা পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে সবাই একযোগে বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকায় এবং সেখান থেকে বিকেলের ট্রেনে করে রাতে চট্টগ্রাম চলে আসে।

তাদের মধ্যে যে কিশোরের বাড়ি কুমিল্লার লাকসামে সে আগেও চট্টগ্রামে এসেছে। তার এক পরিচিত ব্যক্তির নগরীর বন্দরটিলা এলাকায় দোকান আছে বলে সে জানে। সেই পরিচিত ব্যক্তির ভরসায় চট্টগ্রামে এসে থাকা এবং বিয়ের ব্যবস্থা করার বিষয়ে অন্যদের আশ্বস্ত করে।

কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম এসে বন্দরটিলার ওই এলাকায় গিয়ে দোকানের সন্ধান পায়নি সে, এমনকি তার কোনো ফোন নম্বরও তার কাছে নেই।

বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তাদের কাছে ছিল মাত্র ছয় হাজার টাকা। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসতেই তাদের বেশকিছু টাকা খরচ হয়ে যায়। রাতে অটোরিকশা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও পরিচিত ব্যক্তির সন্ধান না পেয়ে অটো চালকের কাছ থেকে রাত যাপনের ব্যবস্থা করে দেয়ার সহায়তা চায়।

ওই অটোচালক তার নিজের অটো ভাড়া বাবদ সাড়ে ৬০০ টাকা নিয়ে ফ্রি-পোর্ট এলাকায় একটি স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে এক নারীর মাধ্যমে রাতে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয় একটি বাসায়, যার জন্য ওই নারীকে তাদের দিতে হয়েছে ৭০০ টাকা ঘর ভাড়া।

সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাড়ি ফিরে যেতে, সে জন্য তারা বাসের টিকিট করতে গিয়েছিল। কিন্তু টাকা সংকুলান না হওয়ায় রাতের ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরতে রেল স্টেশনে গিয়েছিল। আর সেখান থেকে তাদের পুলিশ থানায় নিয়ে আসে।

তবে তারা বিয়ের জন্য শাড়ি ও বাড়ি থেকে আরো কিছু কসমেটিকস কিনেছিল। উদ্ধার করা শিক্ষার্থীদের ব্যাগ থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।

সহকারী কমিশনার নোবেল বলেন, উদ্ধার হওয়া কিশোর-কিশোরীরা সবাই নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের দুই কিশোরীর মা প্রবাসী শ্রমিক। পারিবারিকভাবে অজ্ঞতা থাকায় তাদের একটি পরিবার বাল্য বিয়ে দেয়ার আয়োজন করছিল। পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় না হওয়ায় তারা পরিবার ছেড়ে পালিয়ে এসেছে।

আজ শনিবার সকালের মধ্যে ছয় কিশোর-কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রামে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019
Design Customized By:Our IT Provider