নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আ.স.ম জামশেদ খোন্দকার বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদের কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কোভিডকালীন সময়ে দেশ-বিদেশে প্রবাসীদের যে সকল সমস্যা বিরাজ করছে সেগুলো অত্যন্ত আন্তরিকভাবে নজরদারী করছেন তিনি। প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের কারণে আমাদেও দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। যোগত্য ও কারিগরি কর্মদক্ষতার সনদপত্র ছাড়া বিদেশে গেলে অনেক কষ্টে পড়তে হবে ও তারা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হতে হবে। ফলে সরকার আশানুরূপ রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হবে। তাই বিদেশ যাওয়ার আগে সময়োপযোগী প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। সরকার ও আশানুরূপ রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) শনিবার সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২১ উপলক্ষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত ‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে অভিবাসন’-শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-‘শতবর্ষে জাতির পিতা, সুবর্ণে স্বাধীনতা, অভিবাসনে আনবো মর্যাদা ও নৈতিকতা’। চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (ডিএমও), জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে রেমিট্যান্স প্রেরকারীদের দুই জন সফল প্রবাসী ৪ জনকে সম্মাননা স্মারক ‘ক্রেস্ট’ তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জামশেদ খোন্দকার।

এসময় তিনি বলেন, বিদেশের শ্রম বাজারে চাহিদা থাকলেও প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে অনেকের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটছেনা। এজন্য প্রত্যেককে দক্ষ হতে হবে। দক্ষতা অর্জন করতে পারলে বাংলাদেশকে সম্মানজনক পর্যায়ে পৌঁছানো যাবে। যারা এখান থেকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিয়ে সনদপত্র অর্জনের মাধ্যমে বিদেশ যাচ্ছে তারাই চাহিদার দ্বিগুন বা তিনগুন পর্যন্ত বেতন পাচ্ছেন। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রমান করতে হলে অভিবাসী কর্মীদের কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। সকল কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুবক-যুবতীদেরকে দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের টেকসই ও উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, প্রবাসীদের হয়রানি ও ভোগান্তি রোধে মধ্যস্বত্তভোগী বা দালাল নির্মূলে বর্তমান সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছে। প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরী করে সরকারিভাবে বিদেশে পাঠালে তাদের অধিকার ও মর্যাদা ক্ষুণœ হয় না এবং তারা বিদেশে খুব ভাল অবস্থানে থাকেন। দেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করে বিদেশে পাঠালে আরো বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দেশে-বিদেশে আরো বেশি কর্মসংস্থান হবে। অভিবাসীরা যাতে সম্পূর্ণ মর্যাদা পায় সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তাই এখন থেকে অভিবাসী কর্মীদের কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো দক্ষ হয়ে বিদেশ যেতে হবে। কাজে দক্ষ না হলে তারা ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হবে। দেশও কাঙ্খিত রাজস্ব পাবেনা।

চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদারের সভাপতিতে ও আঁখি মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিকেটিটিসি’র অধ্যক্ষ বেগম নওরীন সুলতানা ও মহিলা টিটিসি’র অধ্যক্ষ বেগম আশরিফা তানজীম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সফল অভিবাসী সংযুক্ত আরব-আমিরাত প্রবাসী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের এ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন কান্তি দেব, প্রত্যাশীর নির্বাহী পরিচালক মনোয়ারা বেগম, ইপসা’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার আবদুস সবুর ও ব্র্যাক’র ইনফরমেশন অফিসার মোঃ রিসান রেজা ও সফল প্রবাসীর কণ্যা সাদিয়া সালাম। এসময় বিভাগীয় কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র কুমার চাকমাসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে দুপুরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অভিবাসী দিবসের সূচনাকরে প্রবাসী কর্মীদের আগমনী ও বিদায় অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করা হয়।