কে এম রাজীবঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু জন্মেছিলো বলে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। পেয়েছি বিজয়ের পতাকা। বঙ্গবন্ধুর নাম পৃথিবীর ইতিহাসে স্বর্ণ অক্ষরে লিখা রবে। কখনো সে নাম মুছে ফেলা যাবেনা। ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায়না। যেমন মুছে ফেলতে পারেনি মাস্টার দা সূর্য সেন ও নেতাজী সুভাষ বসুর নাম। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করা না যায় তাহলে তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিক ভাবে অনুভূতি করতে পারবেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিষয়টি অনুভূতির বিষয়। এটিকে লালন ও ধারণ করতে পারলে স্বাধীনতার পূর্ণ সফলতা অর্জিত হবে। এ প্রজন্মের কাছে যদি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে না পারি তারা একদিন আমাদের দোষবে। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টায় নগরীর মোমিন রোডস্থ প্রিয়া কমিউনিটি সেন্টারে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা ফাউন্ডেশন ও বঙ্গবন্ধু সাহিত্য একাডেমি’র যৌথ উদ্যােগে আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ও কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সেদিন সমস্ত কিছুর মায়া ত্যাগ করে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম এবং বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। কিন্তু সেদিন যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিলো তারা আজো ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করে শাসন ক্ষমতা হাতে নিয়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের কালো হাত ভেঙ্গে দিয়ে বাংলাদেশকে আজ বিশ্বের দরবারে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিচিত করেছে। যারা আগে বাংলাদেশকে মিসকিন বলতো আজ তারা বলছে শেখ হাসিনার হাতে আলাউদ্দিনের চেরাগ আছে।
সংগঠনের চেয়ারম্যান একুশে পদক প্রাপ্ত ভৌত বিজ্ঞানী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া ও সংগঠনের সচিব লায়ন ডা: আর কে রুবেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী। এসময় মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন,৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে আমার ভাই সাইফুদ্দীন খালেদ চৌধুরীকে হারিয়েছি। এরকম লাখো শহীদদের আত্মহুতির বিনিময়ে যে বাংলাদেশ সোনার বাংলায় রূপান্তর করা গেলেই স্বাধীনতা শব্দটি অর্থবহ হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. বেনু কুমার দে। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীল ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলেই স্বাধীনতার প্রকৃত রূপ ফুটে উঠবে। বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও অনুষ্ঠানের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া বলেন স্বাধীনতার এ মাহেন্দ্রক্ষণে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। নিয়মিত জ্ঞান চর্চা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে শুদ্ধচর্চায় নিবেদিত হতে হবে আগামী প্রজন্মকে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের চেয়ারম্যান সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমেই স্বাধীনতার অগ্রযাত্রার পথ সুগম করতে হবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজয়’৭১ এর সভাপতি নাট্যজন সজল চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু সাহিত্য একাডেমির পরিচালক জসিম উদ্দীন চৌধুরী। বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইদ্রিস, বীর মুক্তিযোদ্ধা মানস কুমার মিত্র, প্রকৌশলী সোননাথ দাশগুপ্ত রাজু, কো-চেয়ারম্যান এম.এ সবুর, কবি আশীষ সেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ বাদশা মিঞা, ডাঃ মুজিবুল হক ডাঃ এস কে পাল সুজন, চৌধুরী, উত্তম কুমার আচার্য্য, মোঃ আবদুল নূর, মোঃ সেলিম, ডাঃ এস.এম কামরুজ্জামান, মোঃ মনজুর আলম, ডা মাহমুদুল হাসান, সংগঠনের সঙ্গীত শিল্পী রূপম মুৎসুদ্দী টিটু, অনুপ কুমার পালিত রাসু, মোঃ আইয়ুব, মো. ইসমাইল হোসেন, আসিফ ইকবাল, রাজশ্রী মজুমদার, শিক্ষিকা মিনু মিত্র, ঝুমকা ঝুমা, আবৃত্তিশিল্পী সোমা মুৎসুদ্দী, নাসরিন তমা, পিংকি চক্রবর্ত্তী, মৃণাল কান্তি দাশ, কানু দাশ, শিলা আক্তার, আরাফাত রহমান কচি ও আনিসুর রহমান ফরহাদ।
Leave a Reply