সঠিক খবর ডেস্ক : চট্টগ্রামে অবাধে চলছে পাহাড় নিধন। কতিপয় লোভী পাহাড় সন্ত্রাসের কবলে পড়ে দিন দিন নির্বিচারে পাহাড় নিধনের ফলে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে পাহাড় বেষ্টিত এই অঞ্চলটি। এসব দেখবালের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের মাঝে মাঝে ২/১ টি লোক দেখানো অভিযানের মাধ্যমে সামান্য কিছু আর্থিক জড়িমানা দিয়ে থাকেন। যার ফলে অপরাধীরা পার পেয়ে তাদের অপরাধের মাত্রা দিনকে দিন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এর কোন স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে রহস্যজনক মনে করছেন সচেতন মহল। আবার ভোটের রাজনীতির কারনে অনেক প্রভাবশালী নেতাও তাদের পক্ষে সাফাই গাইতে শোনা যায়। নগরীর চারদিকে চোখ ঘুরালেই এমন দৃশ্য চোখে পড়বে অহরহ। পাহাড়ের এই কান্না যেন পৌছায়না পরিবেশবাদীদের কান পর্যন্ত।
এদিকে আকবর শাহ থানা এলাকায় রাজনীতির ছত্রছায়ায় নির্বিচারে পাহাড় নিধন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমনিভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে নগরীরর ঝাউতলা থেকে টাইগারপাস এলাকার বাটালি পাহাড়।
নগরীর বায়েজীদ থানা এলাকার বেশিরভাগ জায়গা পাহাড় বেষ্টিত। থানার আশেপাশে অনেক পাহাড় কেটে বানিয়ে ফেলা হয়েছে প্রায় সমতল ভুমি। গড়ে তোলা হয়েছে আবাসিক ঘরবাড়ি ও দোকান-পাট। ছিন্নমুল নামের বায়েজীদের আরেকটি বৃহৎ অংশে চোখের সামনে সরকারি পাহাড় নিধন করে একশ্রেনির প্রভাবশালীরা প্লট বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও যেন কারোর কোন মাথা ব্যথা নেই। আবার এসব দখল-বেদখল নিয়ে মাঝে মাঝে শুরু হয় দাঙ্গা-হাঙ্গামাও হয় শক্তির প্রদর্শনি। যার ক্ষমতা বেশি সেই টিকে থাকেন দখল বাণিজ্যের এই আসরে। আবার সরকারি এসব পাহাড়ে নিশ্চিন্তে পেয়ে যান বিদ্যুতের সংযোগও।
পাহাড় নিধনের এই চিত্র শুধু শহরেই সীমাবদ্ধ নয় পাহাড়ের বিশাল বিশাল অংশ দখল করে কর্তনের মাধ্যমে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল বস্তি। পরিবেশ ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে কর্পোরেট কোম্পানীগুলোও। এই তালিকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সীতাকুণ্ড এলাকায়।
পরিবেশ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, মিরসরাই এবং সীতাকুন্ড উপজেলার অন্তত ১ লাখ ৬০ হাজার বর্গফুট পাহাড়ি এলাকা ধ্বংস করেছে বেশ কয়েকটি নামি দামি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের বিভিন্ন সময়ে জরিমানা করা হলেও, তাদের পাহাড় কাটা বন্ধ হয়নি।
এই ব্যপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল গণমাধ্যমকে বলেন, আইনের ফাঁকে অনেক পাহাড় সন্ত্রীরা পার পেয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সামন্য জরিমানাতেই অভিযোগের সমাপ্তি ঘটে। এসব পাহাড় দস্যুদের সাথে অনেক সরকারি কর্মকর্তারও যোগসাজস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন পাহাড় কর্তনকারীর সাথে সহায়তাকারীদেরও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির আওতায় আনা গেলে পাহাড় কাটা কিছুটা হলেও রোধ করা সম্ভব হবে।
পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, পাহাড় কাটা ও পরিবেশ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যারা এই পাহাড় নিধনের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ আদালতে মামলাও করা হয়েছে। তবে লোকবল সংকটে অনেকেই আমাদের নজর ফাঁকি দিয়ে অপকর্ম করে থাকে কিন্তু আমরা জানার সাথে সাথেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
Leave a Reply