গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের আগে ব্রাজিলকে হারিয়ে দিল ক্যামেরুন। ‘জি’ গ্রুপের ম্যাচের যোগকরা সময়ে ভিনসেন্ট আবু বকরের দারুণ হেডে ১-০ গোলের জয় তুলে নেয় আফ্রিকান প্রতিনিধিরা। আরেক ম্যাচে সার্বিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়ে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে সুইজারল্যান্ড।
গ্রুপের লড়াই শেষে ব্রাজিল ও সুইজারল্যান্ড— দুই দেশের সংগ্রহ সমান, ৬ পয়েন্ট করে। গোল গড়ে এগিয়ে থাকায় গ্রুপ সেরা হয়েছে ব্রাজিল। শেষ ষোলর লড়াইয়ে দেশটির প্রতিপক্ষ পর্তুগালকে হারিয়ে আসা দক্ষিণ কোরিয়া। সুইজারল্যান্ড খেলবে পর্তুগালের বিরুদ্ধে।
২০০২ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ব্রাজিলের সবচেয়ে কম গড় বয়সি স্কোয়াড মাঠে নামে ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে। ব্রাজিল ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বয়সে বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড গড়া দানি আলভেজের উপস্থিতির পরও ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে খেলা একাদশের গড় বয়স ২৭ বছর ১০১ দিন। ম্যাচের প্রথমার্ধে ৬৮ শতাংশ বল দখলে রাখা ব্রাজিল শট নিয়েছে ১০টি, বিপরীতে একটি শট নিতে পেরেছে ক্যামেরুন। বড় সুযোগ সৃষ্টির দিক থেকে অবশ্য দুই দলে সমতা ছিল। বিরতির পর ব্রাজিল আক্রমণের স্রোত বেগবান হলেও প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি দলটি।
১৪ মিনিটে ফ্রেডের ক্রস থেকে গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির হেড ফিস্ট করেন ক্যামেরুন কিপার ডেভিস এ্যাপাসি। গোটা ম্যাচে ব্রাজিলের সামনে চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এ গোলরক্ষক। ৫৬ মিনিটে মার্টিনেলির আরেকটি দারুণ প্রচেষ্টা ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান এ্যাপাসি। এক মিনিটের মধ্যে এ্যাডার মিলিতাওকে হতাশ করেন এ কিপার। এ্যান্টনির বাঁকানো শটও আস্থার সঙ্গে রুখেছেন এ গোলরক্ষক। ৮৪ মিনিটে ক্রিস্টোফার উ দারুণ দক্ষতায় ব্রাজিলের পরিকল্পিত আক্রমণ রুখে দেন। ৮৮ মিনিটে বক্সের মধ্যে থেকে বাইরে শট মেরে সুযোগ নষ্ট করেন পেদ্রো।
ব্রাজিল ঝড়ের বিপরীতে যোগকরা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ডানদিক থেকে জেরোম বেকেলের ক্রসে দূরে পোষ্টে করা দারুণ হেডে বল জালে আছড়ে ফেলেন ভিনসেন্ট আবুবকর (১-০)। ৮১ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখা ৩০ বয়সি ফরোয়ার্ড জার্সি খুলে গোল উদযাপনে করেন। অবধারিত দ্বিতীয় হলুদকার্ড দেখানোর আগে মরক্কোতে জন্ম নেয়া যুক্তরাষ্ট্রের রেফারি ইসমাইল এলফাথ মাথায় হাত বুলিয়ে ভিনসেন্ট আবুবকরকে লাল কার্ড দেখান। প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে হারনোর তৃপ্তিতে মার্চিং অর্ডার মেনে নিয়ে হাসি মুখেই মাঠ ছেড়ে যান সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে খেলা এ ফরোয়ার্ড। কোপা আমেরিকা ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হারের পর থেকে অপরাজিত ছিল ব্রাজিল। সে ধারায় ছেদ টানলো ক্যামেরুন।
সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ২০ মিনিটে জারদেন শাকিরির গোলে লিড পায় সুইজারল্যান্ড (১-০)। বিশ্বকাপে এটি ছিল শিকাগো ফায়ার্সে খেলা তারকার পঞ্চম বিশ্বকাপ গোল। ৯ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় সার্বিয়া। ২৬ মিনিটে আলেকজান্দার মিত্রোভিচের গোলে স্কোর লাইন ১-১ হয়। ৩৫ মিনিটে দুসান ব্লাহোভিচ সার্বিয়াকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন। ৪৪ মিনিটে ব্রিল এমবোলোর গোলে সমতায় আসে সুইসরা। জন্মভূমি ক্যামেরুনের বিরুদ্ধেও গোল করেছিলেন মোনাকোর এ ফরোয়ার্ড। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচে সুইজারল্যান্ড দ্বিতীয়বারের মতো লিড পায় ৪৮ মিনিটে, রেমো ফ্রেউলারের গোলে (৩-২)। বিরতির পর গ্রানাইট জাকার নেতৃত্বে মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করে লিড ধরে রাখে সুইজারল্যান্ড।
দুই ম্যাচের মাধ্যমে চূড়ান্ত হল নকআউট পর্বের লাইনাপ। এ পর্বে মুখোমুখি হচ্ছে— নেদারল্যান্ডস-যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড-সেনেগাল, আর্জেন্টিনা-অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স-পোল্যান্ড, জাপান-ক্রোয়েশিয়া, স্পেন-মরক্কো, দক্ষিণ কোরিয়া-ব্রাজিল পর্তুগাল-সুইজারল্যান্ড।
Leave a Reply