1. admin@sathikkhabor.com : JbSknUo :
  2. 2015khohanctg@gmail.com : Khokan Mazumder : Khokan Mazumder
  3. baruasangita145@gmail.com : Sangita Barua : Sangita Barua
শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ১১:৩৩ অপরাহ্ন

সারাদেশে ২১ শতাংশ মানুষ উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩
  • ৩৯ Time View

সঠিক খবর ডেস্ক : উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশন দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যগত সমস্যা, যা অকালমৃত্যু ঘটায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে অনুযায়ী দেশে প্রতি পাঁচজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ২১ শতাংশ মানুষ উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত। এ কারণে বাংলাদেশ উচ্চরক্তচাপের নীরব মহামারির মধ্যে রয়েছে।

এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে এনসিডি লক্ষ্যমাত্রা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগজনিত অকালমৃত্যু এক-তৃতীয়াংশে কমিয়ে আনা সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়বে।

এমন পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের মতো আজ বুধবার দেশে বিশ্ব উচ্চরক্তচাপ দিবস-২০২৩ পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন’।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ইপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, রক্ত চলাচলের সময় ধমনির ভেতরের গায়ে যে পার্শ্বচাপ তৈরি হয়, সেটিকে রক্তচাপ বলে। রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেড়ে গেলে তাকে উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলে।

রক্তচাপ সাধারণত দুটি মাত্রা বা সংখ্যার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। প্রথম সংখ্যাটি সিস্টোলিক, যা হৃৎপিণ্ড সংকুচিত হয়ে রক্তনালিতে যে চাপ তৈরি হয় এর প্রতিনিধিত্ব করে। দ্বিতীয় সংখ্যাটি ডায়াস্টোলিক, যা হৃৎপিণ্ডের প্রসারণের সময়ে রক্তনালিতে চাপের প্রতিনিধিত্ব করে। স্বাভাবিক অবস্থায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের রক্তচাপের পরিমাপ ১২০/৮০ মিমি. পারদচাপ ধরা হয়।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জানা যায়, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস যেমন-খাদ্যের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ (সোডিয়াম) গ্রহণ, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এবং তামাক, অ্যালকোহল সেবন উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনও উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। যেমন: শারীরিকভাবে কর্মঠ না থাকা, অতিরিক্ত ওজন, মানসিক চাপ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলমূল ও শাকসবজি না খাওয়া। তারা আরও জানান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগটির (উচ্চরক্তচাপ) নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ ও উপসর্গ থাকে না। রোগী বুঝতেই পারে না যে সে উচ্চরক্তচাপে ভুগছে। এ কারণে উচ্চরক্তচাপকে নীরব ঘাতক বলা হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সকালের দিকে মাথাব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, হৃৎপিণ্ডের অনিয়মিত ছন্দ, দৃষ্টিতে পরিবর্তন এবং কানে গুঞ্জনের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

উচ্চরক্তচাপের চিকিৎসা করা না হলে এটি ধমনি এবং মানবদেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে। ধমনি শক্ত হয়ে হৃৎপিণ্ডে রক্ত ও অক্সিজেনের প্রবাহ হ্রাস পেতে পারে। ফলে বুকে ব্যথা বা অ্যানজাইনা, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলর এবং হার্ট বিট অনিয়মিত হতে পারে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ অর্থাৎ স্ট্রোক এমনকি বিকল হতে পারে।

ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ডা. মলয় কান্তি মৃধা বলেন, সবশেষ বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপে দেখা গেছে, ১৮ বছরের বেশি বয়সি মানুষ (২৭ দশমিক ৩ শতাংশ) উচ্চরক্তচাপে ভুগছে। এ সংখ্যা ২০৩০ সাল নাগাদ গিয়ে দাঁড়াবে ৩ কোটি ৮০ লাখে। কিন্তু আক্রান্তদের ৬৭ শতাংশ জানে না তাদের রোগটি রয়েছে। উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী (৬৪ শতাংশ) কোনো ওষুধ সেবন করে না। ১৪ শতাংশ মানুষের রোগটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের মাধ্যমে ৭৬ শতাংশ উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

বিশেষজ্ঞরা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দেশের জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে ১৫ শতাংশ ও মোট জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ হওয়া উচিত। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে দেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যা মোট জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। উচ্চরক্তচাপের মতো অসংক্রামক রোগের প্রকোপ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সংশ্লিষ্টরা জানান, উচ্চরক্তচাপ মহামারি মোকাবিলায় সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বহু খাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ২০১৮-২০২৫ তৈরি করা হয়েছে। যেখানে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অনুসরণ করে ২০২৫ সালের মধ্যে উচ্চরক্তচাপের প্রাদুর্ভাব তুলনামূলকভাবে ২৫ শতাংশ কমানোর জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উচ্চরক্তচাপ ব্যবস্থাপনায় জাতীয় গাইডলাইন এবং এর চিকিৎসায় ন্যাশনাল প্রোটোকল প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদি (২০১৭-২০২২) হেলথ, পপুলেশন অ্যান্ড নিউট্রিশন সেক্টর প্রোগ্রামে (চতুর্থ এইচপিএনএসপি) অসংক্রামক রোগ ব্যবস্থাপনায় উচ্চরক্তচাপকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019
Design Customized By:Our IT Provider